ত্রয়োদশ সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে এরই মধ্যে দুই দফায় ২৭২ আসনে দলের সম্ভাব্য প্রার্থীর নাম ঘোষণা করেছে বিএনপি। এমন প্রেক্ষাপটে ফ্যাসিবাদবিরোধী যুগপৎ আন্দোলনের শরিক দলগুলো আসন সমঝোতা নিয়ে বিএনপির সঙ্গে দ্রুততম সময়ের মধ্যে আলোচনায় বসতে চায়। শরিকদের কারও মনোনয়নই এখনো চূড়ান্ত না হওয়ায় বিষয়টি নিয়ে তারা এক ধরনের উদ্বেগ-উৎকণ্ঠার মধ্যে রয়েছেন। যদিও এরই মধ্যে তাদের কয়েকজনকে প্রার্থিতার বিষয়ে গ্রিন সিগন্যাল দিয়েছে বিএনপি। তবে নির্বাচনের তপশিল ঘোষণার সময় এগিয়ে আসায় শরিক দলগুলোর নেতারা এখন আসন সমঝোতার বিষয়ে স্পষ্ট হতে চান, একই সঙ্গে চান আনুষ্ঠানিক ঘোষণাও।
শরিক দলের নেতারা মনে করছেন, বিএনপি যেহেতু এরই মধ্যে তাদের দলীয় প্রার্থীদের আসনগুলোতে নাম ঘোষণা করে দিয়েছে, এখন জোটের আসনগুলোতেও প্রার্থীর নাম ঘোষণা করা দরকার। এজন্য তারা শিগগির বিএনপির সঙ্গে আলোচনায় বসতে চান।
গত ৩ নভেম্বর প্রথম দফায় ২৩৬ আসনে দলের প্রাথমিক প্রার্থী তালিকা প্রকাশ করে বিএনপি। এর এক মাস পর গত বৃহস্পতিবার আরও ৩৬ আসনে দলীয় প্রার্থীদের নাম ঘোষণা করা হয়েছে। সে হিসাবে মোট ২৭২ আসনে বিএনপির প্রার্থী ঘোষণা করা হলো। এখন ফাঁকা রয়েছে আরও ২৮ আসন। বিএনপি থেকে বলা হয়েছে, এই ফাঁকা আসনগুলোতে মূলত শরিকরাই নির্বাচন করবেন। ফাঁকা আসনগুলো প্রসঙ্গে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, ‘আমাদের অ্যালায়েন্সের সঙ্গে যারা আছেন, মূলত এগুলো তাদের।’
ফ্যাসিবাদবিরোধী যুগপৎ আন্দোলনের মিত্রদের নিয়ে একই সঙ্গে নির্বাচন ও সরকার গঠন করার অঙ্গীকার রয়েছে বিএনপির। নির্বাচন সামনে রেখে আসন বণ্টন বা আসন সমঝোতা প্রশ্নে বিএনপির চাওয়া অনুযায়ী যুগপতের মিত্ররা তাদের প্রার্থী তালিকাও জমা দিয়েছে। এ অবস্থায় শরিকদের সঙ্গে আলোচনা ছাড়াই প্রার্থী ঘোষণায় তারা বিস্মিত হয়েছেন। এমন প্রেক্ষাপটে গতকাল নয়াপল্টনের অনুষ্ঠিত নির্বাহী কমিটির সভায় বিএনপির সঙ্গে দীর্ঘ ২০ বছরের রাজনৈতিক সম্পর্ক ছিন্ন করার ঘোষণা দিয়েছে বাংলাদেশ লেবার পার্টি।
অন্যদিকে, শরিক দলের নেতাদের সঙ্গে কোনো আলোচনা না করে প্রার্থী ঘোষণায় বিস্মিত হয়েছে ১২ দলীয় জোট। গতকাল জোটপ্রধান মোস্তফা জামাল হায়দারের খিলগাঁওয়ের কার্যালয়ে জোটের এক সভায় বিস্ময় প্রকাশ করেন নেতারা।
গণতন্ত্র মঞ্চের অন্যতম শীর্ষ নেতা সাইফুল হক বলেন, ‘আলোচনা ছাড়াই বিএনপি একতরফাভাবে তাদের প্রার্থী তালিকা ঘোষণা করেছে। এতে শুধু শরিকরাই ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে, তা নয়; পরোক্ষভাবে বিএনপিও ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে।’
এসব তথ্য তুলে ধরে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে কালবেলা।