news.ibtvusa@gmail.com

929-633-2900

শেখ হাসিনাকে মুখ খুলতে দেওয়া ভারতের নতুন কৌশল?

শেখ হাসিনাকে মুখ খুলতে দেওয়া ভারতের নতুন কৌশল?

আইবিটিভি ডিজিটাল      প্রকাশিত: বিকাল ০৪:১৫, ০৫ নভেম্বর ২০২৫, বুধবার      আপডেট: দুপুর ০১:৪৩, ১০ ডিসেম্বর ২০২৫, বুধবার

প্রায় ন'মাস আগেকার কথা। ঢাকায় শেখ মুজিবের বাসভবন ভাঙচুরের পর বাংলাদেশ সরকার অভিযোগ করে, ভারতে অবস্থানরত শেখ হাসিনাই সোশ্যাল মিডিয়াতে লাগাতার মিথ্যা ও উসকানিমূলক বক্তব্য দিয়ে পরিস্থিতিকে অস্থিতিশীল করে তুলতে চাইছেন এবং ভারতের উচিত তার মুখে রাশ টেনে ধরা। ঠিক তার পর দিনই ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় পাল্টা বিবৃতি দিয়ে দাবি করে, শেখ হাসিনা যা বলছেন তা তিনি 'ব্যক্তি শেখ হাসিনা হিসেবে’ এবং ভারত সরকারের সেখানে কোনো ভূমিকাই নেই।

শেখ হাসিনাকে আদৌ প্রকাশ্যে মুখ খুলতে দেওয়া উচিত কি না, তা নিয়ে দিল্লি ও ঢাকার মধ্যে যে পরিমাণ কূটনৈতিক তিক্ততা তৈরি হয়েছে তা এক কথায় নজিরবিহীন। এমনকী বিষয়টি নিয়ে কথাবার্তাও হয়েছে বাংলাদেশের প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূস ও ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর মধ্যে। গত এপ্রিলে ব্যাংককে বিমস্টেক শীর্ষ সম্মেলনে নরেন্দ্র মোদি মুহাম্মদ ইউনূসকে বলেন, আজকের এই সোশ্যাল মিডিয়ার যুগে কারও মুখেই লাগাম পরানো সম্ভব নয় এবং শেখ হাসিনার ক্ষেত্রেও ঠিক সেটাই ঘটছে।

এই পাল্টাপাল্টি যুক্তির মধ্যেই গত ২৯ অক্টোবর বিশ্বের তিনটি আন্তর্জাতিক মিডিয়া আউটলেটে একযোগে শেখ হাসিনার তিন তিনটি আলাদা সাক্ষাৎকার প্রকাশিত হয়েছে। যদিও সেই 'সাক্ষাৎকার'গুলো লিখিত বা ইমেইল প্রশ্নোত্তরের ভিত্তিতে করা, তারপরও বিষয়টি যে ভারত সরকারের সম্মতিতেই হয়েছে তা নিয়ে পর্যবেক্ষকদের কোনও সন্দেহই নেই।

বিশ্লেষকদের ধারণা, শেখ হাসিনার ওপর যেসব বিধিনিষেধ শুরুতে আরোপিত হয়েছিল তার অনেকগুলোই ধীরে ধীরে শিথিল করা হচ্ছে। দিল্লিতে শীর্ষস্থানীয় থিংকট্যাংক মনোহর পারিক্কর ইনস্টিটিউট ফর ডিফেন্স স্টাডিজ অ্যান্ড অ্যানালিসিস এর সিনিয়র ফেলো ড. স্ম্রুতি পট্টনায়কের ধারণা, এই যে ভারত এখন শেখ হাসিনাকে আরও বেশি করে মুখ খুলতে দিচ্ছে এবং আন্তর্জাতিক মিডিয়ায় সাক্ষাৎকার দিতে দিচ্ছে, তার মূলে আছে বাংলাদেশের রাজনৈতিক ল্যান্ডস্কেপে আওয়ামী লীগকে প্রাসঙ্গিক রাখার চেষ্টা।

ড. পট্টনায়ক বলেন "কিন্তু আওয়ামী লীগ হলো সে দেশের এমন একটি বৃহৎ রাজনৈতিক শক্তি যাদের সঙ্গে ভারতের ঐতিহাসিকভাবে সুসম্পর্ক। সেই দলটি যখন সেখানে মুখ খোলারই সুযোগ পাচ্ছে না তখন ভারতকে তো এটুকু করতেই হবে, শেখ হাসিনাকে বলতে দিতে হবে"।

কয়েক মাস আগেই বিবৃতি দিয়ে ভারত যদিও দাবি করেছে শেখ হাসিনার বক্তব্য মানেই সেটা দিল্লির বক্তব্য নয়, সব ক্ষেত্রে যে কথাটা সত্যি নয় তা সুবিদিত। বরং ভারতের পক্ষে আনুষ্ঠানিকভাবে বা প্রকাশ্যে যেগুলো বলা সম্ভব নয়, তার অনেক কথাই শেখ হাসিনার মুখ দিয়ে বলানো হচ্ছে – এমনটাই মনে করেন দিল্লিতে আন্তর্জাতিক সম্পর্কের বিশেষজ্ঞ তথা জেএনইউ-র সাবেক অধ্যাপক বলদাস ঘোষাল।
ড: ঘোষাল বলেন, "আমি তো বলব শেখ হাসিনার এই সাক্ষাৎকারগুলোর মধ্যে দিয়ে ভারতই একটু আক্রমণাত্মক অবস্থান নিতে চাইছে।"
এসব তথ্য তুলে ধরে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে বিবিসি বাংলা।