‘অনুপ্রবেশের কারণে হিন্দু কমছে, বাড়ছে মুসলিম।’ ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির বক্তব্য ঘিরে চলমান এই বিতর্কে নতুন করে ঘি ঢাললেন দেশটির স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। হিন্দু-সংখ্যাগরিষ্ঠ দেশটিতে হঠাৎ মুসলিম জনসংখ্যা বৃদ্ধির নেপথ্যে পাকিস্তান ও বাংলাদেশের অনুপ্রবেশকেই দায়ী করলেন অমিত। শুক্রবার নয়াদিল্লির এক অনুষ্ঠানে এই মন্তব্য করেন তিনি। আর এ নিয়েই শুরু হয়েছে নতুন বিতর্ক। রোববার অমিত শাহের এই পরিসংখ্যানকে মিথ্যা বলে পালটা মন্তব্য করেন অল ইন্ডিয়া মজলিশ-ই-ইত্তেহাদুল মুসলিমীন প্রধান আসাদুদ্দিন ওয়াইসি।
সংবাদসংস্থা পিটিআই-র এক প্রতিবেদন অনুযায়ী, নয়াদিল্লির ওই অনুষ্ঠানে যোগ দিয়ে অমিত শাহ বললেন, ‘এদেশে হিন্দুদের সংখ্যা কমার নেপথ্যে ধর্মের কোনো বিশেষ ভূমিকা নেই। অন্যদিকে মুসলিম জনসংখ্যা বৃদ্ধির কারণ আবার মোটেই বাড়ন্ত জন্মহার নয়। বরং, বিরাট সংখ্যায় অনুপ্রবেশ।’ এরপরেই একটি পরিসংখ্যান তুলে ধরেন তিনি। বলেন, ‘দেশের মুসলিমদের সংখ্যা ২৪.৬ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে। অন্যদিকে হিন্দু জনগণের সংখ্যা কমেছে ৪.৫ শতাংশ। এমন ভাববেন না যে দেশে ধর্ম নির্বিশেষে জন্মহার কমছে। বরং অত্যাধিক অনুপ্রবেশের কারণেই এই পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। দেশভাগের পর পাকিস্তান দুদিকেই ধর্মের ভিত্তিতে দেশ গড়েছিল। এবার সেই বাংলাদেশ আর পাকিস্তান থেকে অনুপ্রবেশকারীরা এদেশে ঢুকে পড়ছে।’ সমস্যা যেমন রয়েছে, সমাধানও রয়েছে।
অনুপ্রবেশকে ইস্যু করে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী দেশের অভ্যন্তরীণ সমস্যাগুলোকে এড়িয়ে যেতে চাইছেন বলেই মত প্রধান বিরোধী দলের। উত্তর প্রদেশের কংগ্রেস সভাপতি অজয় রাই বলেন, ‘দেশজুড়ে সমস্যার পাহাড় তৈরি হয়েছে, তাই কি আপনি জনগণকে ভুল বোঝাতে ব্যস্ত হয়েছেন’। তবে অনুপ্রবেশ সম্পর্কে ‘অমিত দর্শন’ আপাদমস্তক মিথ্যা বলে মন্তব্য করেন অল ইন্ডিয়া মজলিশ-ই-ইত্তেহাদুল মুসলিমীনের প্রধান আসাদুদ্দিন ওয়াইসি।
রোববার এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, প্রথম আদমশুমারি থেকে ২০১১ সালের আদমশুমারি পর্যন্ত মুসলিম জনসংখ্যা ৪.৪ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে। এরপর অমিত শাহকে কটাক্ষ করে তিনি বলেছেন, তার গণিত ‘দুর্বল’।
ওয়াইসি বলেন, ‘অমিত শাহ জনসংখ্যা নিয়ে বিবৃতি দিয়েছেন। তিনি মিথ্যার পর মিথ্যা বলছেন। যদি কোথাও ১০ জন মানুষ থাকে এবং ১০ জন বৃদ্ধি পায়, তাহলে এটি ১০০ শতাংশ বৃদ্ধির মতো দেখাবে। আমি জানি না অমিত শাহের গণিত এত দুর্বল কি না’।