দাঁড়ি কামিয়ে এবং লুঙ্গি পড়ে পালাতে চেয়েছিলেন শেখ হাসিনা এবং শেখ রেহানার ক্যাশিয়ার সালমান এফ রহমান। কিন্তু দরবেশি বেশ পরিবর্তন করেও শেষ রক্ষা পেলেন না তিনি। পালাতে গিয়ে গ্রেফতার হলেন ৫ই আগস্টের গণ-অভ্যুত্থানের আগে প্রতাপশালী অবস্থানে থাকা বেক্সিমকো গ্রুপের সালমান। তিনি শুধু একাই গ্রেফতার হননি সঙ্গে ছিলেন আইন অঙ্গনের কুকীর্তির মূল কুশীলব আনিসুল হক। উপরে ফিটফাট ভদ্রলোক পরিচয়ের আড়ালে, বিচার বিভাগকে দলীয়করণ থেকে শুরু করে সাবেক প্রধান বিচারপতি এসকে সিনহাকে দেশত্যাগে বাধ্য করার পেছনে মূল কারিগর ছিলেন তিনি। শেখ হাসিনা আদেশ দিতেন আর তিনি আইনের দিকটা দেখে সব বাস্তবায়ন করতেন।
মঙ্গলবার রাতে তাদের দুজনের গ্রেফতারের বিষয়টি নিশ্চিত করে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের কমিশনার মাইনুল হাসান জানিয়েছেন, রাজধানীর সদরঘাট এলাকা থেকে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়। নিউমার্কেট থানায় দায়েরকৃত মামলায় দুই নেতাকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে। কোটা সংস্কারের দাবিতে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কর্মসূচি চলাকালে ১৬ জুলাই ঢাকা কলেজের সামনে সংঘর্ষে দুজন নিহত হন। একজন ছাত্র ও একজন হকার। এ ঘটনায় নিউমার্কেট থানায় দুটি হত্যা মামলা হয়েছে। এসব হত্যার ঘটনায় ইন্ধনদাতা হিসেবে এই দুজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। সালমান ও আনিসুল হক পালানোর চেষ্টা করছেন গোয়েন্দা সূত্রে এমন খবরে সদরঘাট এলাকায় অভিযানে যায় পুলিশের একটি দল। সেখান থেকে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়। নিরাপদ রুট মনে করে আওয়ামী লীগের হেভিওয়েট এ দুই নেতা নৌপথে পালানোর চেষ্টা করেছিলেন বলে গোয়েন্দা কর্মকর্তারা মনে করছেন।
আন্দোলন ঘিরে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের মুখে গত ৫ আগস্ট পদত্যাগ করে দেশ ছাড়েন শেখ হাসিনা। এর পরপরই শেখ হাসিনা সরকারের মন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের অন্য নেতারা আড়ালে চলে যান। সালমান এফ রহমানের গ্রেপ্তার হওয়ার খবর এলেও ভারতীয় গণমাধ্যমে এর আগে দাবি করা হয়েছিল তিনি শেখ হাসিনার সঙ্গে দেশ ছাড়েন। আনিসুল হক ব্রাহ্মণবাড়িয়া-৪ কসবা থেকে নির্বাচন করে আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। ২০১৪ সালে তাকে আইনমন্ত্রী করা হয়। এরপর থেকে তিনি আইনমন্ত্রীর পদে ছিলেন। সালমান এফ রহমান এফবিসিসিআইর সাবেক সভাপতি ও বেক্সিমকো গ্রুপের প্রতিষ্ঠাতাদের একজন। তিনি আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনার বেসরকারি খাতবিষয়ক উপদেষ্টা ছিলেন। ২০১৮ সালের কারচুপি পূর্ণ ও ২০২৪ সালের ডামি নির্বাচনে সালমান এফ রহমান ঢাকা-১ আসন থেকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন।