গাজীপুরের টঙ্গী পূর্ব থানাধীন টিএনটি বাজার জামে মসজিদের খতিব মুফতি মহিবুল্লাহ মিয়াজীর নিখোঁজের ঘটনাটি একটি সাজানো নাটক ছিলো বলে ধারণা করছে পুলিশ। সিসিটিভি ফুটেজ, মোবাইল ট্র্যাকিং এবং চিকিৎসকের প্রতিবেদনেও মহিবুল্লাহ’র বক্তব্যের সঙ্গে বড় ধরনের অসংগতি পাওয়া গেছে। তদন্ত শেষে এই খতিবের বিরুদ্ধেই অভিযোগপত্র দাখিলের প্রস্তুতি নিচ্ছে পুলিশ। মঙ্গলবার টঙ্গী থানা সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
এর আগে সোমবার রাত ১০টার দিকে মাওলানা মুহিব্বুল্লাহকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য টঙ্গী পূর্ব থানায় নিয়ে আসে পুলিশ। যদিও আনুষ্ঠানিকভাবে কোনো ব্রিফিং দেওয়া হয়নি, তবে সূত্র জানায়—জিজ্ঞাসাবাদের সময় মাওলানা মুহিব্বুল্লাহ স্বীকার করেছেন যে ঘটনাটি তার নিজের ইচ্ছাতেই ঘটেছে।
গত বৃহস্পতিবার সকাল পৌনে ৭টায় পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়া থানাধীন হেলিপ্যাড বাজার এলাকায় শিকল বাঁধা অবস্থায় তাকে দেখতে পেয়ে স্থানীয়রা জাতীয় জরুরি সেবা ৯৯৯-এ ফোন দেন। খবর পেয়ে তেঁতুলিয়া থানার পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে তাকে উদ্ধার করে পঞ্চগড় সদর হাসপাতালে ভর্তি করে।
পুলিশ সূত্র জানায়, গত ২২ অক্টোবর সকাল ৭টার দিকে ঘটনাস্থল হিসেবে উল্লিখিত শিলমুন সিএনজির সামনের এলাকায় সিসিটিভি ফুটেজে মুহিব্বুল্লাহকে দ্রুত হেঁটে যেতে দেখা যায়। তার সঙ্গে কোনো ব্যক্তি বা অ্যাম্বুলেন্সের উপস্থিতি মেলেনি। মোবাইল ট্র্যাকিং ও ফুটেজ বিশ্লেষণে জানা যায়, তিনি ক্যামেরার আড়াল হয়ে যান এবং পরে সিরাজগঞ্জ হয়ে পঞ্চগড়ে পৌঁছান।
পঞ্চগড় আধুনিক সদর হাসপাতালের সিভিল সার্জন জানান, শরীরে কোনো দৃশ্যমান আঘাতের চিহ্ন পাওয়া যায়নি; শুধু ব্যথানাশক ওষুধ দেওয়া হয়েছিল। তদন্ত কর্মকর্তাদের ভাষ্য অনুযায়ী, খতিব নিজেই নিজের পায়ে শিকল বেঁধেছিলেন—পুরো ঘটনাটি ছিল তার নিজের সাজানো নাটক। তদন্ত সংশ্লিষ্টরা আরও জানিয়েছেন, খতিব কর্তৃক উল্লিখিত হুমকির চিঠি সম্পর্কেও অনুসন্ধান চলছে এবং ঘটনার পেছনের উদ্দেশ্য খতিয়ে দেখা হচ্ছে। কেন তিনি এমন কাণ্ড ঘটিয়েছেন তা বের করার চেষ্টা চলছে। তার এই নিখোঁজের ঘটনার পরই ইসকন নিষিদ্ধের আন্দোলন শুরু হয়। আন্দোলনকারীদের অভিযোগ এর পেছনে ইসকনের হাত রয়েছে।