জাতীয় নাগরিক পার্টির আহ্বায়ক নাহিদ ইসলামের সাম্প্রতিক ‘সেফ এক্সিট’ বিষয়ক মন্তব্য ঘিরে দেশের রাজনীতিতে শুরু হয়েছে আলোচনা-সমালোচনা। তবে ইতোমধ্যে বেশ কয়েকজন উপদেষ্টা প্রকাশ্যে তাদের অবস্থান স্পষ্ট করে জানিয়েছেন– ‘সেফ এক্সিট নয়, বাকি জীবন বাংলাদেশেই কাটাবেন’।
২০২৪ সালের ৫ আগস্ট গণঅভ্যুত্থানে শেখ হাসিনার সরকারের পতনের পর ৮ আগস্ট ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে প্রধান উপদেষ্টা করে অন্তর্বর্তী সরকার গঠন করা হয়। তখন ছাত্রদের প্রতিনিধি হিসেবে উপদেষ্টা হয়েছিলেন নাহিদ ইসলাম। গত ফেব্রুয়ারিতে তিনি সরকার থেকে পদত্যাগ করে এনসিপির আহ্বায়কের দায়িত্ব নেন। এর কয়েক মাস যেতেই উপদেষ্টাদের নিরাপদ প্রস্থানের অভিযোগ তোলেন তিনি।
সম্প্রতি একটি টেলিভিশন চ্যানেলকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে নাহিদ ইসলাম বলেন, অনেক উপদেষ্টা নিজেদের আখের গুছিয়েছে অথবা গণঅভ্যুত্থানের সঙ্গে প্রতারণা করেছে। যখন সময় আসবে, তখন আমরা এদের নামও উন্মুক্ত করব।
তিনি আরও বলেন, উপদেষ্টাদের অনেকেই বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের সাথে লিয়াজোঁ করে ফেলেছে। তারা নিজেদের সেফ এক্সিটের কথা ভাবতেছে।
নাহিদের বক্তব্যের পর নিজেদের অবস্থান পরিষ্কার করেছেন অন্তর্বর্তী সরকারের কয়েকজন উপদেষ্টা। তারা বলছেন, এক্সিট খুঁজছেন না। বাকি জীবন দেশেই থাকবেন।
এ ইস্যুতে সম্প্রতি আইন উপদেষ্টা আসিফ নজরুল বলেন, ‘এখন সেফ এক্সিট নিয়ে নানা কথাবার্তা হচ্ছে। আমরা উপদেষ্টারা খুব নিশ্চিতভাবে জানি যে, আমাদের কারও কোনো সেফ এক্সিটের প্রয়োজন নাই।’
গত বুধবার সচিবালয়ে পরিবেশ উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বলেন, ‘আমি একদম কোনো এক্সিট খুঁজছি না। দেশেই ছিলাম, এর আগেও বহু ঝড়-ঝঞ্ঝা এসেছে, ওই সব ঝড়-ঝঞ্ঝা প্রতিহত করে দেশে থেকেছি। বাকি জীবনও বাংলাদেশেই কাটিয়ে যাব আপনাদের সাথে ইনশাআল্লাহ।’
গত বৃহস্পতিবার এক ফেসবুক পোস্টে সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ফাওজুল কবির খান বলেন, ‘শিক্ষকতার সূত্রে, ইতোপূর্বে যুক্তরাষ্ট্র ও সিঙ্গাপুরের স্থায়ী বাসিন্দা হওয়ার নিশ্চিত সুযোগ গ্রহণ করিনি।
গত শনিবার ধর্ম উপদেষ্টা আ ফ ম খালিদ হোসেন বলেন, ‘নির্বাচিত সরকারের কাছে দায়িত্ব হস্তান্তর করে আমরা চলে যাব। সেফ এক্সিট বলতে আমি কিছু বুঝি না। আমি এই দেশের মানুষ। এই দেশ আমার, এখানেই আমি থাকব।’
সর্বশেষ রোববার সচিবালয়ে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী বলেন, ‘আমার ছেলে-মেয়ে সবাই দেশে, আমি একা বিদেশে গিয়ে কী করব?’