গণ-অভ্যুত্থানের পর রাজনীতিতে বড় সংকটের মধ্যে পড়েছে আওয়ামী লীগ। বর্তমানে আওয়ামী লীগের কেন্দ্র থেকে তৃণমূলের দায়িত্বশীল অধিকাংশ নেতাই দেশে-বিদেশে আত্মগোপনে আছেন, অথবা কারাগারে আছেন। সম্প্রতি শেখ হাসিনার মৃত্যুদণ্ডের রায় হওয়ার পর রাজনীতিতে তার ভবিষ্যত ও আওয়ামী লীগের পরবর্তী নেতৃত্ব নিয়ে আবার আলোচনা শুরু হয়েছে।
তবে বাংলাদেশের বড় দুটি দলের নেতৃত্বে পরিবর্তন আনতে একটি অগণতান্ত্রিক তৎপরতা রয়েছে–– এমন অভিযোগ করেছেন ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয়। বিবিসি বাংলাকে দেওয়া একান্ত সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, দুই দলেরই নেতৃত্ব পরিবর্তনে 'বিদেশ থেকে একটা খেলা চলছে'।
বাংলাদেশে কার্যক্রম নিষিদ্ধ থাকা আওয়ামী লীগের পাশাপাশি বড় দল বলতে তিনি বিএনপিকে বুঝিয়েছেন, তবে খেলা বলতে আসলে কী বোঝাচ্ছেন এবং কারা এর সঙ্গে জড়িত সে বিষয়টি পরিষ্কার করেননি।
দলের নেতৃত্বে শেখ হাসিনার পর তাদের পরিবারের কারো সরাসরি হাল ধরার সম্ভাবনাও নাকচ করেছেন জয়। শেখ হাসিনার অবর্তমানে কিংবা তার মায়ের পরে তিনি দলের নেতৃত্বে আসতে চান কি না–– এ প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, দলই এ ব্যাপারে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবে। জয় বলেন, "যেটা এখন চেষ্টা করা হচ্ছে। এখন কিন্তু বাস্তবে বাংলাদেশে দুই দলেরই নেতৃত্ব পরিবর্তন করার উপর থেকে বিদেশ থেকে একটা খেলা চলছে। এটা গণতান্ত্রিক না।"
দেশে আওয়ামী লীগ ও বিএনপিকে বড় দল উল্লেখ করে তিনি বলেন, এই দুই দলেরই কেবল নির্দিষ্ট ভোটব্যাংক আছে যা দেশের বাকি কোনো দলের নাই। বাংলাদেশে ক্ষমতায় এলে বিএনপি অথবা আওয়ামী লীগ এই দুই দলের একটি আসবে বলেও তিনি উল্লেখ করেন।
বর্তমানে ভারতে অবস্থান করে দলের নেতৃত্ব দিচ্ছেন শেখ হাসিনা। কিন্তু এই নেতৃত্ব পরিবর্তনের কোনো সম্ভাবনা বা আলোচনাও নেই। শেখ হাসিনার পর আওয়ামী লীগে নেতৃত্বে কে আসবেন এই ব্যাপারে আওয়ামী লীগ পরিষ্কার কোনো ধারণা দেয়নি। জয়ের ভাষায়, দলে কেউ শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে দাঁড়াতে চায় না।
আওয়ামী লীগের ভবিষ্যৎ নেতৃত্বের প্রসঙ্গে সাম্প্রতিককালে সায়মা ওয়াজেদ পুতুলের নামটিও আলোচনায় আছে তৃণমূলে। শেখ রেহানা ও তার ছেলে মেয়েরাও দলের নেতাকর্মীদের ভাষায় 'বঙ্গবন্ধু'র পরিবারের সদস্য। আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের বড় অংশের মূল্যায়ন হলো–– ভবিষ্যৎ নেতৃত্বে মুজিব পরিবারের মধ্যেই থাকার সম্ভবনাই প্রবল। এসব তথ্য তুলে ধরে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে বিবিসি বাংলা।