সময়ের ক্যালকুলেটরে জাতীয় সংসদ নির্বাচনের বাকি আছে মাত্র তিন মাস। অন্তর্বর্তী সরকারের অন্যতম এজেন্ডায় রয়েছে এ নির্বাচন। ওই হিসেবে রাজনীতির মাঠ এখন অনেকটা নির্বাচনমুখী। আসনভিত্তিক সমাবেশ, গণসংযোগ শুরু করেছেন দলীয় মনোনয়নপ্রত্যাশীরা। ঠিক এমন মুহূর্তে জাতীয় নাগরিক পার্টির আহ্বায়ক, সাবেক তথ্য উপদেষ্টা নাহিদ ইসলাম বলেছেন, ‘উপদেষ্টাদের অনেকেই বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের সঙ্গে লিয়াজোঁ করে ফেলেছেন। তারা এখন নিজেদের সেফ এক্সিট বা নিরাপদ প্রস্থান নিয়ে ভাবছেন।’
নাহিদ ইসলামের এ মন্তব্যে মুহূর্তে রাজনৈতিক অঙ্গনে ছড়িয়ে পড়ে উত্তাপ। টেলিভিশনের টক শো ও সামাজিকমাধ্যমে শুরু হয় ব্যাপক আলোচনা। রাজনৈতিক দলগুলো নিজেদের মধ্যে নাহিদের মন্তব্য নিয়ে কথা বলছে। নানান আলোচনা হচ্ছে সরকারের ভিতরেও। আলোচনার পাশাপাশি অনেকে নির্বাচন নিয়ে শঙ্কা প্রকাশ করেছেন। তাদের যুক্তি, নাহিদ ইসলাম একসময় ছিলেন সরকারের ভেতরের লোক। তার কাছ থেকে যখন এ ধরনের মন্তব্য আসে তখন সেটা নিঃসন্দেহে গুরুত্ব পায়।
নাহিদ ইসলামের বক্তব্যের পর গতকাল একই ইস্যুতে আরো আক্রমণাত্মক মন্তব্য করেন এনসিপির উত্তরাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক সারজিস আলম। তিনি বলেন, ‘কিছু উপদেষ্টার মধ্যে দেখা যাচ্ছে, তারা কোনোভাবে দায়সারা দায়িত্ব পালন করেন। এ দায়সারা দায়িত্ব নেওয়ার জন্য অভ্যুত্থান-পরবর্তী একটি সরকার কাজ করতে পারে না। তারা এত শহীদ, রক্তের ওপরে দাঁড়িয়ে ওখানে আছেন। তারা যদি এমনটা করে থাকেন, তাহলে দেশের মানুষের সামনে মুখ দেখাতে পারবেন না। নির্বাচনের মধ্য দিয়ে এক্সিট নিতে পারলেই হলো। যারা এ ধরনের চিন্তা করেন তাদের জন্য মৃত্যু ছাড়া কোনো সেফ এক্সিট নেই। পৃথিবীর যে প্রান্তে যাক বাংলাদেশের মানুষ তাদের ধরবে।’
এনসিপির পক্ষ থেকে অন্তর্বর্তী সরকার জনগণের প্রত্যাশা পূরণ করতে ব্যর্থ হয়েছে বলে মন্তব্য করা হচ্ছে। পাশাপাশি কয়েকজন উপদেষ্টার বিরুদ্ধে আর্থিক অনিয়মের তির ছোড়া হয়েছে। সরকারের ভূমিকায় অনেকটা হতাশ তারা। তাই সেই দৃষ্টিকোণ থেকে সেইফ এক্সিটের কথা বলা হয়েছে বলে দলটি তাদের ব্যাখ্যায় জানিয়েছে।
অন্যদিকে বর্তমান সরকারকে সমর্থন দেওয়া অন্যান্য রাজনৈতিক দলও সরকারের কয়েকজন উপদেষ্টার মন্তব্যে দারুণ বিরক্ত বলে জানান। তাদের মন্তব্য, কোনো কোনো উপদেষ্টা হয়তো ক্ষমতা আরো বেশিদিন উপভোগ করতে চান। এ কারণে কোনোভাবে নির্বাচন বানচাল করার পাঁয়তারা করছেন। পাশাপাশি নিজেরা সেইফ থাকার চেষ্টা করছেন। নাহিদ ইসলাম সেফ এক্সিট নিয়ে যেসব কথা বলেছেন সেসব জনগণের কথা বলে মন্তব্য করেছেন অধ্যাপক নুরুল আমিন বেপারী।