সাংস্কৃতিক অঙ্গনে এক সুপরিচিত ও বিতর্কিত নাম কৌশিক হোসেন তাপস। কখনো গায়ক, কখনো সুরকার, আবার কখনো সংগীত পরিচালক। মিডিয়ায় তার উত্থান নিয়ে রয়েছে রহস্য, রয়েছে কুকীর্তির নানা কাহিনি।
তবলা বাদক থেকে টিভি চ্যানেলের কর্ণধার বনে যাওয়া তাপস আলোচিত বিভিন্ন কারণে। তার সঙ্গে সখ্য ছিল সালমান এফ রহমান, আ হ ম মুস্তফা কামাল, জুনাইদ আহমেদ পলকসহ উচ্চপদস্থ সরকারি কর্মকর্তাদের। দেশের বিভিন্ন পাঁচতারকা হোটেলে সংগীতায়োজনের নামে ‘ব্রোথেল হাউসে’ প্রভাবশালীদের মনোরঞ্জনের ব্যবস্থা করে হাতিয়ে নিতেন সব ধরনের সুযোগ-সুবিধা।
ফ্যাসিস্ট আওয়ামী সরকারের কর্তাব্যক্তিদের সঙ্গে যোগসাজশ ও গত বছরের ১৮ জুলাই কোটা আন্দোলনে রাজধানীর আজমপুরে ব্যবসায়ী ইশতিয়াক মাহমুদকে হত্যার চেষ্টার অভিযোগে দায়ের করা মামলায় গ্রেপ্তার হন তিনি। এর পরই বেরিয়ে আসে তার ভয়ংকর সব কুকীর্তি। হত্যা মামলায় গ্রেপ্তার হলেও উপর মহলের তদবিরে গত ১৮ জুন কারাগার থেকে জামিনে বেরিয়ে আসেন চুপিসারে। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন ঢাকা বিভাগের কারা উপ-মহাপরিদর্শক মো. জাহাঙ্গীর কবির। কীভাবে এই মিডিয়া মাফিয়ার গোপনে জামিন হলো আর মুক্তি পেলেন—তা নিয়ে রয়েছে ধোঁয়াশা।
অনেকেই ধারণা করছেন, কিছু উপদেষ্টা ও রাজনৈতিক প্রভাবশালীর ছত্রচ্ছায়া ও সহযোগিতায় তার জামিন হয়েছে। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে হত্যাকারীদের প্রত্যক্ষ-পরোক্ষভাবে অর্থের জোগান দেওয়ার সুস্পষ্ট প্রমাণ থাকার পরও তার জামিনের বিষয়টি আশ্চর্যজনক। তাপসের জামিনের সময়টিতে মিডিয়ায় খুব বেশি একটা তোলপাড় হয়নি রহস্যময় কারণে। গোপনীয়তার সঙ্গে একান্ত নিভৃতে তার মুক্তি ও পলায়ন বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকারের কয়েকজনের সংশ্লিষ্টতা রয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। তবে একটি বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেলের তবলা বাদক থেকে মিডিয়া মাফিয়া হয়ে ওঠা কৌশিক হোসেন তাপসের জামিন নিয়ে সংশ্লিষ্টদের অনেকেই নীরবতা পালন করছেন।