রাজপথের আন্দোলন থেকে ব্যালটের ময়দান, সবখানেই রাজনৈতিক দলগুলোতে মিলছে তোড়জোড় প্রস্তুতির আভাস। পিছিয়ে নেই গণঅভ্যুত্থান থেকে উঠে আসা দল জাতীয় নাগরিক পার্টি। অন্তত ১০০ আসনে প্রার্থী দেওয়ার লক্ষ্য নিয়ে এগোচ্ছে দলটি। আলোচনায় আছে সম্ভাব্য আসন সমঝোতা। ইতোমধ্যে বিএনপির সঙ্গে হয়েছে একাধিক দফা বৈঠক, আলোচনা চলছে আসন বণ্টন ও কৌশলগত অংশীদারত্ব নিয়ে।
এখন প্রশ্ন হলো—রাজনৈতিক হিসাব-নিকাশ, জনসমর্থন আর আদর্শিক ঘনিষ্ঠতার এ জটিল সমীকরণে এনসিপি ঠিক কোন পথ বেছে নেবে? জোটের ছায়ায় নিরাপদ লড়াই, না কি একক শক্তির পরীক্ষায় নিজের অবস্থান পরখ করবে তারা?
বিএনপি এখনো আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে শরিক দলগুলোর জন্য কতটি আসন ছাড় দেবে, সে বিষয়ে কোনো চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিতে পারেনি। যদিও গত একাদশ সংসদ নির্বাচনে তারা শরিকদের জন্য ৫৮টি আসন ছেড়েছিল। তবে বিএনপির স্থায়ী কমিটির এক সদস্য সময়ের আলোকে জানান, এনসিপি যদি বিএনপির নেতৃত্বাধীন জোটে যোগ দেয়, তবে তাদের প্রায় ২০টি আসনে ছাড় দেওয়া হতে পারে।
সম্প্রতি বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান দুটি সাক্ষাৎকারে বলেন, বিএনপি অন্য দলকে নিয়ে সরকার গঠনে প্রস্তুত। এসব দলের মধ্যে গত বছর অভ্যুত্থানে সামনের কাতারে থাকা ছাত্রদের নেতৃত্বে গড়ে ওঠা একটি নতুন দলও রয়েছে। কম-বেশি সবাইকে নিয়েই আগামীতে বিএনপি সরকার গঠন করতে চায়।
এনসিপির যুগ্ম আহ্বায়ক সারোয়ার তুষার সময়ের আলোকে জানান, তারা অবশ্যই কারও না কারোর সঙ্গে জোট করবেন। তিনি বলেন, তারা দেখছেন কার সঙ্গে গেলে রাজনৈতিকভাবে ভালো অর্জন হতে পারে। সব দলের সঙ্গে তারা আলাদাভাবে বসছেন, তবে আসনভিত্তিক আলোচনা শুরু হয়নি। তিনি আরও বলেন, প্রথমে তারা ৩০০ আসনে নির্বাচন করার সক্ষমতা অর্জন করতে চান এবং অন্তত ১০০ আসনে নির্বাচন করতে চান। এর মধ্যে যতটা সম্ভব আসন ভাগাভাগির চেষ্টা করবেন। সেই সংখ্যা পরে নির্ধারণ করা হবে বলেও তিনি জানান।
এনসিপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম আহ্বায়ক সামান্তা শারমিন জানান, বুধবার রাতে আহ্বায়ক নাহিদ ইসলামের বাসায় নির্বাচনি জোট নিয়ে এক জরুরি বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। সেখানে অনেক বিষয়ে আলোচনা হলেও তখনও কোনো চূড়ান্ত সিদ্ধান্তে পৌঁছানো যায়নি বলে তিনি জানান।
এ বিষয়ে এনসিপির সদস্য সচিব আখতার হোসেন বলেন, তারা বিভিন্ন জায়গায় বৈঠক করছেন এবং নির্বাচন ও জোট বিষয়ে তখনও কোনো সুস্পষ্ট সিদ্ধান্ত হয়নি। পারস্পরিক আলোচনা চলছে বলেও তিনি উল্লেখ করেন।