আসন্ন নির্বাচনে জয়ী হবে কোন দল? এ নিয়েই যেন চলছে হিসাব-নিকাশ। চায়ের দোকান থেকে রাজনৈতিক মহল, সব জায়গায়ই আলোচনায় নির্বাচন ইস্যু। এসব হিসাব নিকাশ মাথায় রেখেই আবার প্রার্থী বাছাই করছে রাজনৈতিক দলগুলোও। জয়ের জন্য প্রতিটি আসনই যে গুরুত্বপূর্ণ, তা বিবেচনায় নিয়েই তালিকায় রাখা হচ্ছে জনপ্রিয় প্রার্থীদের। তবে এবারের নির্বাচনে ৩ দলের হাড্ডাহাড্ডি লড়াইয়ের আভাস দিচ্ছেন বিশ্লেষকরা। এমন অবস্থায় প্রশ্ন উঠছে কে হচ্ছেন আগামীর প্রধানমন্ত্রী? জামায়াতের আমির ডা. শফিকুর রহমান, বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়াম্যান তারেক রহমান নাকি এনসিপির আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম?
আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পর যে সরকার গঠিত হবে, এর প্রধানমন্ত্রী হিসেবে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের সম্ভাবনা বেশি দেখছেন মানুষ। আর প্রায় এক–চতুর্থাংশ মানুষ জামায়াতে ইসলামীর আমির শফিকুর রহমানের প্রধানমন্ত্রী হওয়ার সম্ভাবনা দেখছেন। প্রথম আলোর উদ্যোগে করা এক জরিপে মানুষের এই মতামত উঠে এসেছে। জরিপটি করেছে বেসরকারি গবেষণাপ্রতিষ্ঠান কিমেকারস কনসাল্টিং লিমিটেড। জরিপের শিরোনাম, ‘গুরুত্বপূর্ণ সামাজিক-রাজনৈতিক বিষয়ে জাতীয় জনমত জরিপ ২০২৫’।
জরিপে একটি প্রশ্ন ছিল, বাংলাদেশের বিভিন্ন নেতার মধ্যে আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পর প্রধানমন্ত্রী হওয়ার সম্ভাবনা কার বেশি বলে মনে করেন? এ প্রশ্নের জবাবে সবচেয়ে বেশি সাড়ে ৪৭ শতাংশ মানুষ বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের পক্ষে মত দিয়েছেন।
অন্যদিকে জামায়াতের আমির শফিকুর রহমানের প্রধানমন্ত্রী হওয়ার সম্ভাবনা মনে করেন ২৫ দশমিক ৪ শতাংশ মানুষ। তিনি অতীতে জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশ নিয়ে জয়ী হতে পারেননি। এর বাইরে শূন্য দশমিক ৬ শতাংশ মানুষ জাতীয় নাগরিক পার্টির আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম এবং শূন্য দশমিক ২ শতাংশ মানুষ জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান জি এম কাদের পরবর্তী প্রধানমন্ত্রী হওয়ার সম্ভাবনা দেখেন।
জরিপের আরেকটি প্রশ্ন ছিল, ‘বাংলাদেশের বিভিন্ন নেতার মধ্যে আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পর কে প্রধানমন্ত্রী হলে দেশের জন্য সবচেয়ে ভালো হবে?’ উত্তরে প্রায় ৩৭ শতাংশ মানুষের মত, তারেক রহমান প্রধানমন্ত্রী হলে দেশের জন্য ভালো হবে। জামায়াতের আমির শফিকুর রহমানের পক্ষে মত দিয়েছেন প্রায় ৩২ শতাংশ মানুষ। নাহিদ ইসলাম প্রধানমন্ত্রী হলে ভালো হবে বলে মনে করেন শূন্য দশমিক ৭ শতাংশ মানুষ। আর জরিপে অংশ নেওয়া শূন্য দশমিক ৭ শতাংশ মানুষ মনে করেন, অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস পরবর্তী প্রধানমন্ত্রী হলে দেশের ভালো হবে।
জরিপে দেশের ৫টি নগর ও ৫টি গ্রাম বা আধা শহরাঞ্চলের ১৮-৫৫ বছর বয়সী ১ হাজার ৩৪২ জনের মতামত নেওয়া হয়। জরিপে অংশ নেওয়া মানুষেরা বিভিন্ন আয়, শ্রেণি ও পেশার। গত ২১ থেকে ২৮ অক্টোবর জরিপের তথ্য সংগ্রহ করা হয়। জরিপকারী প্রতিষ্ঠান বলেছে, এটা দেশের প্রতিনিধিত্বমূলক জরিপ, তবে নির্দিষ্টভাবে কোনো নির্বাচনী এলাকার প্রতিনিধিত্ব করে না। জরিপের নমুনা এমন মানুষদেরই তুলে ধরেছে, যাঁরা অনলাইন অথবা ছাপা পত্রিকা পড়তে পারেন এবং আগামী নির্বাচনে ভোট দেওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। জরিপের ফলাফলের নির্ভরযোগ্যতার মাত্রা ৯৯ শতাংশ।