ibtvusa@gmail.com

917-517-9777

জাতিসংঘে বিশ্বনেতাদের মধ্যমণি ড. ইউনূস!

জাতিসংঘে বিশ্বনেতাদের মধ্যমণি ড. ইউনূস!

আইবিটিভি নিউজ ডেস্ক     

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে অতিথির বেশে শান্তিতে নোবেলজয়ী বিশ্ব বরেণ্য অর্থনীতিবিদ ড. মুহাম্মদ ইউনূস, এ যেন নতুন কিছু নয়। জাতিসংঘের বিভিন্ন ফোরামে ভাষণ থেকে শুরু করে বিভিন্ন সংস্থার দায়িত্ব পালন যেন তার জন্য নিত্যনৈমিত্তিক বিষয়। তবে এবার সেই যুক্তরাষ্ট্রে নতুন রূপে দেখা মিলবে বিশ্ব বরেণ্য এ ব্যক্তির। এবার কোনো অতিথি বক্তা হিসেবে নয়, সরকারপ্রধান হিসেবে বিশ্বমঞ্চে বাংলাদেশকে তুলে ধরবেন তিনি।


গণঅভ্যুত্থান পরবর্তী সময়ে ভিন্ন পরিস্থিতিতে বাংলাদেশ সরকারের প্রধান হিসেবে দায়িত্ব নেওয়ার পর জাতিসংঘের সাধারণ অধিবেশনে যোগ দেবেন ড. মুহাম্মদ ইউনূস। তার সফর ঘিরে জাতিসংঘে নতুন দৃশ্যের অবতারণা হতে যাচ্ছে। আন্তর্জাতিক ফোরাম থেকে শুরু করে বিশ্বনেতাদের নজর থাকবে বিশ্ব বরেণ্য এ অর্থনীতিবিদের দিকেই। তার মুখ থেকে নতুন বাংলাদেশের কথা উঠবে বিশ্বমঞ্চে। নিউইয়র্কের কূটনৈতিক সূত্রে জানা যায়, ৩০ বছরের ইতিহাসে এবার প্রথম বাংলাদেশের কোনো সরকারপ্রধানের সঙ্গে অধিবেশনের ফাঁকে দ্বিপক্ষীয় বৈঠক করতে যাচ্ছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। এ ছাড়া প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের দেয়া সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে যোগ দিবেন ড. ইউনূস। গত বৃহস্পতিবার ওয়াশিংটনের পক্ষ থেকে জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের অধিবেশনের ফাঁকে ইউনূস-বাইডেন বৈঠকের বিষয়টি চূড়ান্ত করা হয়।  যদিও সাধারণ পরিষদের অধিবেশন চলার ফাঁকে কোনো দেশের শীর্ষ নেতার সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্টের দ্বিপক্ষীয় সাক্ষাৎ প্রায় বিরল। 

বাংলাদেশের রাষ্ট্র ও সরকারপ্রধানের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্টের সবসময় সংবর্ধনায় দেখা হয়েছে বা কথা হয়েছে। কিন্তু গত তিন দশকে জাতিসংঘের অধিবেশনের ফাঁকে বাংলাদেশের কোনো শীর্ষ নেতার সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্টের কোনো বৈঠক হয়নি, যা এবার ঘটতে যাচ্ছে। বিষয়টি অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ ও সম্মানের। অন্তর্র্বতী সরকার দায়িত্ব নেওয়ার পর যুক্তরাষ্ট্রের উচ্চ পর্যায়ের প্রতিনিধিদল গত ১৫ সেপ্টেম্বর ঢাকা সফর করে গেছে। তার দুই সপ্তাহের মাথায় প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন বৈঠকে বসছেন অন্তর্র্বতী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা বিশ্ববরেণ্য ড. ইউনূসের সঙ্গে। সূচি অনুযায়ী, ২৭ সেপ্টেম্বর জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের ৭৯তম অধিবেশনে ভাষণ দেবেন ড. ইউনূস। তার ভাষণ ঘিরে সবার আগ্রহ। কারণ, বাংলাদেশে ঘটে যাওয়া বিরল ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানে নজর ছিল বিশ্ববাসীর। আর বিক্ষোভের মুখে পতন হয় দীর্ঘ প্রায় ১৬ বছর ধরে একনায়কতন্ত্র চালানো স্বৈরশাসক হাসিনার।

জানা যায়, জাতিসংঘের অধিবেশনে বাংলাদেশে জুলাই-আগস্টে সংঘটিত বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের প্রেক্ষাপট এবং ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানের বীরত্বগাঁথা তুলে ধরবেন প্রধান উপদেষ্টা। একই সঙ্গে রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর রাষ্ট্র মেরামতের জন্য অন্তর্র্বতী সরকারের নেওয়া সংস্কার কার্যক্রম বিশ্ববাসীর সামনে উপস্থাপন করবেন তিনি।

জাতিসংঘে বাংলাদেশের স্থায়ী মিশনের কর্মকর্তারা বলছেন, ড. মুহাম্মদ ইউনূস সারাবিশ্বেই জনপ্রিয় ও পরিচিত এক মুখ। তার ক্ষুদ্রঋণের মাধ্যমে দারিদ্র্য দূরীকরণ তত্ত্ব আজ বিশ্বব্যাপী সমাদৃত। এর আগে তিনি জাতিসংঘসহ বিশ্বের বিভিন্ন নামি প্রতিষ্ঠানে গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করেন। ভাষণ দিয়েছেন সিনেটসহ অনেক রাষ্ট্রের আইনসভায়। তবে এবারের জাতিসংঘ অধিবেশন সম্পূর্ণ ভিন্ন। কারণ, তিনি হাজির হয়েছেন সরকারপ্রধান হিসেবে। এমনকি বিশ্বের বিভিন্ন দেশের সরকারপ্রধান ও সংস্থার প্রধান নোবেল বিজয়ী ড. ইউনূসের সঙ্গে সাক্ষাতের আগ্রহ প্রকাশ করেছেন।

কর্মকর্তারা আরও জানান, মূল অধিবেশনের পাশাপাশি বেশ কয়েকটি সাইট ইভেন্টে যোগ দেবেন প্রধান উপদেষ্টা। বিভিন্ন সংস্থা প্রধান ও রাষ্ট্র প্রধানের সঙ্গে তার দেখা হওয়ার কথা রয়েছে। এবার ড. ইউনূসের মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র সফর খুবই সংক্ষিপ্ত হওয়ায় অনেকের সঙ্গে তার বৈঠক সম্ভব হবে না। তবে এবার জাতিসংঘে সবার নজর যে তার দিকে থাকবে সেটা আগে থেকেই আঁচ করা যাচ্ছে।